সালামের উত্তর ও সমাজে সালামের কিছু ভুল প্রচলন



আসসালামু আলাইকুম এর উত্তর ওয়ালাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু


আল্লাহ তাআলা বলেছেন তোমাদেরকে যদি কেউ সালাম দেয়, সে যে বাক্যগুলো ব্যবহার করে তার চাইতে বেশি বাক্য ব্যবহার করে তার উত্তর দাও অথবা যতটুকু বলেছে ততটুকু উত্তর দাও। 

অতএব, সালামের জবাব দেওয়া এটি বিনয়ী ব্যক্তির আলামত, ভালো মানুষের লক্ষণ, সালামের উত্তর দিবে সালামের উত্তর দিতে কার্পণ্য করবেনা। 

আমাদের দেশে অপরিচিত লোককে সালাম দিলে সালামের উত্তর খুব কমই পাওয়া যায়। এটা অহংকারের কারণে দেয় না সেটা না, এটা হলো আমাদের কালচারটা অনেকটাই এরকম হয়ে গেছে যে পরিচিত লোককে সালাম দিতে হবে। আমি কি তাকে চিনি, কেন আমাকে সালাম দিল, এরকম মনে করে এটা উচিত না। 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, তুমি সালাম তাকে দাও যাকে চেনো এবং তাকেও সালাম দাও যাকে চেনো না। 


সমাজে সালামের কিছু ভুল প্রচলন


নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন আরো বলেন তোমরা সালামকে ব্যাপকভাবে প্রচার করো। অতএব সালাম দিতে হবে এবং সালামের উত্তর দিতে হবে তাহলে আমি সেরা মানুষ হতে পারব। 

সালাম অত্যন্ত সহজ একটি ইবাদত সালামের অফুরন্ত সাওয়াবের কথা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। অথচ এই ছোট একটি আমল করতে গিয়ে আমরা বেশ কিছু ভুল করে থাকি সালাম কে কেন্দ্র করে। যে ভুলগুলো আমরা সচরাচর করে থাকি:


১. সালাম দিতে অহংকার বোধ করা: অনেকে অহঙ্কার বসত সালাম দিতে চায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সবার আগে সালাম দিয়ে দেয়, সে অহংকার থেকে মুক্ত। 


২. বিকৃত এবং অশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেয়া: অনেকে স্লামালাইকুম বলে থাকেন, এই উচ্চারণটি অশুদ্ধ। তাই আমাদের শুদ্ধভাবে আসসালামুয়ালাইকুম বলে সালাম দিতে হবে। 


৩. অনেকে সালামের বদলে পাল্টা জবাব না দিয়ে শুধুমাত্র মাথা নাড়িয়ে থাকেন। কেউ আপনাকে মুখে সালাম দিলে পাল্টা আপনাকেও মুখেই সালামের উত্তর দিতে হবে তাকে শুনিয়ে  উত্তর দিতে হবে এটি ওয়াজিব। সালাম দেয়া সুন্নত হলেও সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। 

যদি আমরা সালামের উত্তর না দেই, শুধু মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেই এটি আমাদের গুনাহের কারণ হবে।

  

৪. আমরা শুধু চেনা জানা লোকেদেরকে  সালাম দিয়ে থাকি: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন উত্তম ইসলামের ব্যাখ্যা দেখে দিতে গিয়ে বলেছেন, সেই মুসলিম উত্তম যে চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিয়ে থাকেন। 

অতএব আমাদের পাশ দিয়ে কেউ হেটে গেলে অথবা আমাদের কাছে কেউ আসলে, আমরা কারো মুখোমুখি হলে, লোকটি আমাদের অপরিচিত হলেও তাকে সালাম দিতে হবে। 


৫. আমরা অনেকেই পরিবারের সদস্যদেৱকে যেমন -স্ত্রী, সন্তান, মা- বাবা এবং আপন ভাই, বোনকে সালাম দিতে ইতস্ত বোধ করি। বাইরের লোকদেরকে আমি সালাম দেই বা না দেই পরিবারের সদস্যদেরকে আরো বেশি করে গুরুত্বের সহিত সালাম দেওয়া উচিত। কারণ সালাম মানে শান্তির দোয়া, নিজের পরিবারের জন্য শান্তির দোয়া করা উচিত। 

তাই পরিবারের সদস্যদেরকে সালাম দিতে ইতস্ত বোধ করা উচিত নয়। 


৬. শ্রদ্ধাভাজন লোকেদেরকে সালাম দিতে হবে পায়ে হাত দিয়ে: এটি একটি ভুল ধারণা মূলত সালাম একটি মুখে উচ্চারণ যোগ্য ইবাদত। "আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু" বলতে পারি অথবা লেখা যেতে পারে। 

এর বাইরে শরীরের কোন অংশে টাচ করা এটা সালামের কোন অংশ নয়, এটি অপসংস্কৃতির অংশ। 


সুতরাং আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে বিশুদ্ধ রূপে একে অপরকে সালাম দেয়ার তৌফিক দান করুন আমীন।