সূরা ইখলাস



সুরাতুল ইখলাস আকার এবং আয়তনে কুরআনের অত্যন্ত একটি ছোট সূরা। কিন্তু ফজিলত এবং মর্যাদা এবং মাহাত্ম্য এর জন্য এটি একটি অনেক বড় ফজিলতপূর্ণ সূরা। 


সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে যে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু লোকের মধ্যে এক সাহাবীকে দায়িত্বশীল করে পাঠালেন। তিনি যতদিন তাদের মধ্যে অবস্থান করেছেন তত দিন ইমামতিতে প্রত্যেক ওয়াক্তে প্রতি রাকাতে তিনি সূরা ইখলাস কে আবশ্যিকভাবে তেলাওয়াত করতেন। 


অন্য যে কোন সূরা তিলাওয়াত করতেন না কেন, রুকুতে যাওয়ার আগে অবশ্যই সূরা ইখলাসকে তিলাওয়াত করতেন। এটাকে তিনি নিয়ম বানিয়ে নিয়েছিলেন। 


বিষয়টি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নজরে নিয়ে আসার ফলে তিনি ওই সাহাবীকে ডেকে এনে এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলেন। 


তখন সেই সাহাবী বললেন সুরাতুল ইখলাস সিফাতুর রহমান অর্থাৎ এ সূরায় শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের গুণের আলোচনা করা হয়েছে। 


এছাড়া অন্য কোন বিষয়ের আলোচনা এই সূরাতে করা হয়নি। এ সূরায় শুধুমাত্র তাওহীদের আলোচনা করা হয়েছে। যার কারণে এ সূরার প্রতি আমার ভাললাগা ও ভালোবাসা কাজ করে। সেজন্য প্রত্যেক ওয়াক্তের প্রতি রাকাতে এ সূরা তিলাওয়াত না করে আমি থাকতে পারিনা। 


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে বললেন, এ সূরার প্রতি তোমার ভালবাসার কারনে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তোমাকে ভালোবাসেন। 


আরেকটি বর্ণনায় এসেছে যে একজন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি সুরা ইখলাসকে ভালবাসি। 


তখন তিনি বললেন সূরা ইখলাসের ভালোবাসা তোমাকে জান্নাত পর্যন্ত নিয়ে যাবে।   


এছাড়াও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা ইখলাস হচ্ছে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ এর সমপর্যায়ে। 


মুহাদ্দিসগণ এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, কুরআনে কারীমের আলোচ্য বিষয় তিনটি এর মধ্যে একটি হচ্ছে তাওহীদ। যেহেতু এই সূরায় তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই একে কোরআনে কারিমের তিনটি বিষয়বস্তুর একটি বিষয় সমৃদ্ধ বলা হয়েছে। 


এ দ্বারা বোঝানো হয়েছে কেউ যদি সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করে। তাহলে কুরআনে কারীম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে শেষ করলে যে সওয়াব হয় সে পরিমাণ সওয়াব দান করবেন আল্লাহ তায়ালা। 


এছাড়াও হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, কেউ যদি সূরা ইখলাস ১০ বার তিলাওয়াত করে, জান্নাতে তার জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়। 


সূরা ইখলাস বেশি বেশি তেলাওয়াত করলে আল্লাহর প্রতি ঈমান বৃদ্ধি পায়। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত সূরা ইখলাস পাঠ করা। 


নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে নিশ্চয়ই আমরা যেন সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করি এরপর ঘুমাই।